ভাওয়াল ইসলামিক ক্যাডেট একাডেমীর ২০২৫ সালের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে মোঃ তৌফিক সুলতান স্যারের প্রেরণাদায়ক বক্তব্য”

“উদ্দীপনা ও আস্থা ভাওয়াল ইসলামিক ক্যাডেট একাডেমীর ২০২৫ সালের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে মোঃ তৌফিক সুলতান স্যারের প্রেরণাদায়ক বক্তব্য”

---

ঢাকা, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ –
আজকের দিনটি স্মরণীয় হয়ে উঠেছে ভাওয়াল ইসলামিক ক্যাডেট একাডেমীর মাঠে, যেখানে অনুষ্ঠিত হলো বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান। ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক, অভিভাবক এবং মর্যাদাপূর্ণ অতিথিরা একত্রে মিলিত হয়ে উদ্যম, আনন্দ ও আন্তরিকতার এক অপরূপ মেলবন্ধনে অংশ নেন। অনুষ্ঠানটি ক্রীড়ার মাঠে শারীরিক দক্ষতার পাশাপাশি মানসিক দৃঢ়তা, নৈতিকতা এবং আত্মবিশ্বাসের শিক্ষাও প্রদান করলো।

ক্রীড়া ও মনোভাবের জ্বালানি

অনুষ্ঠানের শুরু থেকেই মাঠে ছড়িয়ে পড়েছিল উদ্দীপনা ও চ্যালেঞ্জের সুর, যেখানে দৌড়, ফুটবল, ব্যাডমিন্টন, ও অন্যান্য খেলাধুলার মাধ্যমে ক্যাডেটরা নিজেদের দক্ষতা ও সংগ্রামের দীপ্তি দেখাতে সক্ষম হন। প্রতিযোগিতার প্রতিটি মুহূর্তে প্রতিযোগিতামূলক আত্মা, সততা, দলবদ্ধতা ও কঠোর পরিশ্রমের মূল্যবোধ স্পষ্টভাবেই ফুটে উঠেছিল।

মোঃ তৌফিক সুলতান স্যারের প্রেরণামূলক বক্তব্য

অনুষ্ঠানের মর্মবাণী হয়ে উঠেন প্রধান অতিথি মোঃ তৌফিক সুলতান স্যারের বক্তব্য। তাঁর উচ্ছ্বসিত ও পরামর্শপূর্ণ বক্তব্যে ছিল ক্রীড়া, শিক্ষা ও নৈতিকতার এক অনন্য মিশেল, যা উপস্থিত সকলের মনে এক অনুপ্রেরণার সঞ্চার ঘটায়।

তাঁর বক্তব্যের কিছু নির্বাচিত অংশ নিম্নরূপ:

“আমরা জানি, ক্রীড়া কেবল শরীরচর্চার মাধ্যম নয়; এটি জীবনের নানা দিককে স্পর্শ করে—আত্মনিয়ন্ত্রণ, অধ্যবসায়, সততা ও একাত্মতার শিক্ষা প্রদান করে। যেভাবে কোরআনের বাণী স্মরণ করিয়ে দেয়, ‘إِنَّ مَعَ الْعُسْرِ يُسْرًا’ (নিশ্চয়ই কষ্টের পর সহজলভ্যতা আছে – কুরআন, ৯৪:৬), আমাদের জীবনের প্রতিটি চ্যালেঞ্জই একটি সুযোগ।

তিনি আরও বলেন,

“আল্লাহ তায়ালার বাণী অনুযায়ী, ‘لَا يُكَلِّفُ اللَّهُ نَفْسًا إِلَّا وُسْعَهَا’ (আল্লাহ কোনো প্রাণকে তার সামর্থ্যের বাইরে বোঝা দেন না – কুরআন, ২:২৮৬)। তাই প্রতিটি ক্যাডেটের জন্য মনে রাখতে হবে, নিজের ক্ষমতার উপর বিশ্বাস রাখা ও পরিশ্রমের মাধ্যমে যে কোনো বাধা জয় করা সম্ভব।

আন্তরিকভাবে ক্যাডেটদের উত্সাহিত করে, তিনি একটি হাদিসের উল্লেখ করেন:

“নবী করিম (সা.) এর বাণী স্মরণ করুন, ‘আপনারা একে অপরকে সেই ভালবাসা করুন যা আপনি নিজের জন্য চান।’”
এই বাণী আজকের ক্রীড়ামঞ্চে স্পষ্টভাবে প্রতিফলিত হয়েছে, যেখানে দলগত মনোভাব ও সহানুভূতির মাধ্যমে একে অপরকে সমর্থন করা হচ্ছে।

ক্রীড়ার পাশাপাশি নৈতিক ও আত্মিক শিক্ষার মহিমা

মোঃ তৌফিক সুলতান স্যারের বক্তব্যে ক্রীড়ার মাঠকে শুধুমাত্র শারীরিক পরিশ্রমের স্থান হিসেবেই নয়, বরং জীবনের নানা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার এক প্রতীক হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে। তিনি উল্লেখ করেন,

“প্রত্যেকটি পরাজয় আমাদেরকে শিখিয়ে দেয় কিভাবে নতুন করে ওঠার শক্তি অর্জন করা যায়; আর প্রত্যেকটি বিজয় আমাদের আত্মবিশ্বাস ও ধৈর্যের নতুন দিগন্ত খুলে দেয়।”

তিনি আরও ব্যাখ্যা করেন যে, ক্রীড়ার প্রতিযোগিতার মাধ্যমে ক্যাডেটরা শিখছে—কিভাবে আত্মসমালোচনা কর

BICA

Bica

তে হয়, কঠোর পরিশ্রমে একাগ্রতা বজায় রাখতে হয় এবং সর্বোপরি, জীবনকে সৌহার্দ্য, পরোপকার ও সৎ পথে পরিচালিত করতে হয়। তাঁর এই উপদেশ আজকের অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ক্যাডেটদের মধ্যে এক নতুন চেতনা, উদ্যম ও ইতিবাচক মনোভাবের সঞ্চার ঘটিয়েছে।

পুরস্কার বিতরণী ও সমাপনী প্রোগ্রাম

অনুষ্ঠানের শেষাংশে ক্যাডেটদের মধ্য থেকে উৎকৃষ্ট পারফর্মারদের স্বীকৃতি দেওয়া হয়। বিজয়ীদের আনন্দে ঝরঝরে চোখ, তাদের পরিশ্রমের ফলাফল ও মনোযোগের প্রশংসা স্বরূপ পুরস্কার বিতরণ করে পুরো মঞ্চটি এক অনন্য উৎসবে রূপান্তরিত হয়।

সমাপনী বক্তব্য

মোঃ তৌফিক সুলতান স্যারের প্রেরণামূলক বক্তব্য ও উপদেশ আজকের অনুষ্ঠানের মূল আলো ছিল। তাঁর কথায় অনুপ্রাণিত হয়ে উপস্থিত সকলেই মনে করলেন,

“আসলে, জীবনের প্রতিটি ধাপেই শেখার একটি নতুন অধ্যায় লুকিয়ে থাকে, আর আমাদের শুধু তা খুঁজে বের করতে হয়।”

এই অনুষ্ঠান শুধুমাত্র একটি ক্রীড়া প্রতিযোগিতা নয়, বরং এটি মানবিক মূল্যবোধ, ঐক্য, ও আত্মউন্নয়নের এক অনন্য উদযাপন। কোরআনের আয়াত ও হাদিসের মাধ্যমে তাঁর বক্তব্য আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে—কঠোর পরিশ্রম, সততা এবং একে অপরকে সহায়তা করার মানসিকতা থাকলে, প্রতিটি চ্যালেঞ্জকে জয় করে এগিয়ে যাওয়া সম্ভব।

---

সম্পাদক:
ভাওয়াল ইসলামিক ক্যাডেট একাডেমী নিউজরুম